এশিয়া কাপ ২০২৫-এর গ্রুপ বি-এর তৃতীয় ম্যাচে হংকং-এর অধিনায়ক নিজাকাত খান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। শেখ জায়েদ স্টেডিয়াম, আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত এই টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হংকং প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৪৩ রানের জন্য ৭ উইকেট হারিয়েছে। নিজাকাত খান এই ইনিংসের সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন, যিনি ৪২ রান করে দলকে সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছাতে সাহায্য করেন। যদিও বাংলাদেশ ১৪৪ রানের লক্ষ্য সহজেই অর্জন করে ৭ উইকেটে জয়লাভ করে, নিজাকাতের এই অবদান হংকং-এর জন্য আশার আলো জ্বালিয়েছে। চলুন, বিস্তারিত জানি ম্যাচের গল্প এবং নিজাকাতের পারফরম্যান্স।
ম্যাচের সারাংশ
বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন দাস টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন। হংকং-এর ইনিংস শুরু থেকেই চ্যালেঞ্জিং ছিল। ওপেনার অ্যানশু রথ (৪) এবং বাবর হায়াত (১৪) দ্রুত আউট হয়ে যান, যার ফলে পাওয়ারপ্লেতে হংকং ৩৪/২-এ ছিল। এরপর জিশান আলী (৩০) এবং নিজাকাত খানের মধ্যে ৪১ রানের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়ে ওঠে, যা হংকংকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনে। তবে, তানজিম হাসান সাকিব জিশানকে আউট করে এই পার্টনারশিপ ভেঙে দেন।
পরে ইয়াসিম মুর্তাজা (২৮ রান, ১৯ বল) তেজি ব্যাটিং করে দলকে বুস্ট দেন, কিন্তু ১৮তম ওভারে তার রান-আউট হয়ে যায়। নিজাকাত খান শেষ পর্যন্ত ৪২ রান করে আউট হন রিশাদ হোসেনের হাতে। হংকং-এর ইনিংসে শেষের দিকে উইকেট পড়ার ফলে স্কোর ১৪৩/৭-এ থেমে যায়। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে তানজিম হাসান সাকিব (২/২১), রিশাদ হোসেন (২/৩১) এবং তাসকিন আহমেদ (২/৩৮) দুই দুই উইকেট নেন।
বাংলাদেশের চেজে লিটন দাস (৫৯ রান, ৩৯ বল) অপরাজিত টাওয়হিদ হৃদয় (৩৫*) এর সাথে ৯৫ রানের পার্টনারশিপ করে দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান। তারা ১৭.৪ ওভারে ১৪৪ রানে পৌঁছে ৭ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে। হংকং-এর বোলারদের মধ্যে আতিক ইকবাল (২/১৪) ভালো করলেও, বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপের সামনে তারা টিকতে পারেনি। এই জয়ে বাংলাদেশ গ্রুপ বি-তে শক্তিশালী অবস্থানে উঠে আসে।
নিজাকাত খানের পারফরম্যান্স বিস্তারিত
হংকং-এর অধিনায়ক নিজাকাত খান এই ম্যাচে দলের সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন। তিনি ৪২ রান করেন, যা হংকং-এর ইনিংসের সর্বোচ্চ স্কোর। নিজাকাতের ব্যাটিং ছিল স্থিতিশীল এবং দায়িত্বশীল – তিনি জিশান আলীর সাথে ৪১ রানের পার্টনারশিপ করে ইনিংসকে স্থিতিশীল করেন। পরে ইয়াসিম মুর্তাজার সাথে মিলে তিনি দলকে ১০০-এর ওপরে নিয়ে যান।
- রান: ৪২
- কীভাবে আউট: রিশাদ হোসেনের বলে আউট (বলের সংখ্যা এবং স্ট্রাইক রেটের বিস্তারিত ডেটা লাইভ আপডেট অনুসারে ১৬ বলে ১২ রানের পরিস্থিতিতে ছিল, কিন্তু ফাইনালে স্লো স্টার্ট থেকে তেজি ফিনিশ)।
- কী অবদান: নিজাকাতের ব্যাটিংয়ে একটি সিক্স এবং কয়েকটি ফোর ছিল, যা হংকংকে প্রতিরক্ষামূলক স্কোর দিতে সাহায্য করে। তিনি ফিল্ডিং-এও অসাধারণ ছিলেন – বাংলাদেশের ওপেনার তানজিদ হাসানকে একটি স্পেকট্যাকুলার ক্যাচ নিয়ে আউট করেন। এছাড়া, ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হংকং-এর বিখ্যাত জয়ের স্মৃতি ফিরিয়ে আনেন, যেখানে তিনি খেলেছিলেন।
নিজাকাতের এই ৪২ রান হংকং-এর জন্য ইতিবাচক ছিল, কিন্তু বাংলাদেশের শক্তিশালী বোলিংয়ের সামনে তারা স্কোরগুলো রক্ষা করতে পারেনি। এই পারফরম্যান্স নিজাকাতকে হংকং-এর মিডল অর্ডারের মূল স্তম্ভ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
ম্যাচের হাইলাইটস এবং স্ট্যাটস
নিচে ম্যাচের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যাটস এবং হাইলাইটস টেবিলে দেওয়া হলো:
বিভাগ | বিস্তারিত |
হংকং-এর স্কোর | ১৪৩/৭ (২০ ওভার) – নিজাকাত খান ৪২, জিশান আলী ৩০, ইয়াসিম মুর্তাজা ২৮ |
বাংলাদেশের স্কোর | ১৪৪/৩ (১৭.৪ ওভার) – লিটন দাস ৫৯, টাওয়হিদ হৃদয় ৩৫* |
ম্যাচের রেজাল্ট | বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয় (১৪ বল বাকি) |
টপ বোলার (হংকং) | আতিক ইকবাল ২/১৪ |
টপ বোলার (বাংলাদেশ) | তানজিম হাসান সাকিব ২/২১, রিশাদ হোসেন ২/৩১ |
গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ | নিজাকাত-জিশান: ৪১ রান; লিটন-হৃদয়: ৯৫ রান |
ভেন্যু | শেখ জায়েদ স্টেডিয়াম, আবুধাবি (পিচ: ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি, কিন্তু বোলারদের সাহায্য করেছে) |
কেন এই ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ?
এশিয়া কাপ ২০২৫-এর এই ম্যাচে হংকং-এর পূর্বের ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ৯৪ রানে হারের পর নিজাকাতের নেতৃত্বে তারা ভালো লড়াই করে। বাংলাদেশের জয় তাদের টুর্নামেন্টে শক্তিশালী শুরু দেয়, যা পরবর্তী ম্যাচগুলোতে তাদের সাহায্য করবে। নিজাকাতের ৪২ রান এবং ফিল্ডিং অবদান তাকে হংকং-এর স্টার প্লেয়ার করে তোলে। ভক্তরা এই ম্যাচের হাইলাইটস দেখে উপভোগ করতে পারেন, বিশেষ করে নিজাকাতের স্থিতিশীল ব্যাটিং এবং ক্যাচ।