কোয়ালকম তাদের পরবর্তী ফ্ল্যাগশিপ প্রসেসর স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলিট ২ নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। সম্প্রতি চীনা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম উইবোতে একটি লিক তথ্য প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে ডিজিটাল চ্যাট স্টেশন (DCS) নামে পরিচিত একজন টিপস্টার দাবি করেছেন যে এই নতুন প্রসেসরটি পারফরম্যান্স টেস্টে অসাধারণ ফলাফল দেখিয়েছে। এই লিক অনুসারে, স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলিট ২, যার মডেল নম্বর SM8850, গিকবেঞ্চ ৬ বেঞ্চমার্ক টেস্টে সিঙ্গল-কোরে ৪,০০০ পয়েন্টের বেশি এবং মাল্টি-কোরে ১১,০০০ পয়েন্টের বেশি স্কোর অর্জন করেছে। এই ফলাফল পূর্ববর্তী স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলিটের তুলনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি নির্দেশ করে

প্রসেসরের সম্ভাব্য স্পেসিফিকেশন
গুজব অনুসারে, স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলিট ২-এর প্রাইম কোরের ক্লক স্পিড ৫.০ গিগাহার্জ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা মোবাইল প্রসেসরের জন্য একটি বড় লাফ। এতে দ্বিতীয় প্রজন্মের ওরিয়ন (Oryon) সিপিইউ কোর ব্যবহৃত হতে পারে, যা আগের মডেলের তুলনায় আরও শক্তিশালী। এছাড়াও, এই প্রসেসরে অ্যাড্রিনো ৮৪০ জিপিইউ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা গ্রাফিক্স পারফরম্যান্সে উল্লেখযোগ্য উন্নতি আনবে। কিছু গুজব থেকে জানা গেছে যে এতে “উন্নত পেগাসাস” কোর ব্যবহার করা হতে পারে, তবে এ বিষয়ে এখনও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
লঞ্চের সময়সীমা
প্রাথমিক গুজব থেকে জানা গেছে যে স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলিট ২ এই বছরের সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে উন্মোচন করা হতে পারে, যা আগের মডেলের (স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলিট, অক্টোবর ২০২৪) তুলনায় কিছুটা আগে। এই তাড়াতাড়ি লঞ্চের ফলে ২০২৫ সালের ফ্ল্যাগশিপ অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলো, যেমন স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৬ সিরিজ, এই প্রসেসর দিয়ে বাজারে আসতে পারে।
পূর্ববর্তী মডেলের তুলনায় উন্নতি
স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলিট, যা ২০২৪ সালের শেষের দিকে এবং ২০২৫ সালে ফ্ল্যাগশিপ ফোনগুলোতে ব্যাপক শক্তি সরবরাহ করেছে, তার ওরিয়ন সিপিইউ কোরের জন্য প্রশংসিত হয়েছে। নতুন স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলিট ২ এই কোরগুলোর উপর ভিত্তি করে আরও উন্নত পারফরম্যান্স দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি শুধু সিঙ্গল এবং মাল্টি-কোর পারফরম্যান্সেই নয়, গ্রাফিক্স এবং সম্ভবত এআই প্রসেসিংয়েও উন্নতি আনবে।
চ্যালেঞ্জ এবং দামের উদ্বেগ
তবে, স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলিট ২-এর দাম নিয়ে কিছু উদ্বেগ রয়েছে। আগের মডেলের মতো এটির দাম বেশি হতে পারে, যা ফোন নির্মাতাদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, স্যামসাং তাদের এক্সিনস প্রসেসরের উন্নয়নে বিনিয়োগ করছে, যাতে তারা কোয়ালকমের উপর নির্ভরতা কমাতে পারে। এছাড়াও, কোয়ালকম বর্তমানে একটি পেটেন্ট মামলার মুখোমুখি, যা তাদের প্রসেসর উৎপাদন প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে।
স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলিট ২ নিয়ে এখনও অনেক কিছু নিশ্চিত হওয়া বাকি, তবে প্রাথমিক লিক এবং গুজব থেকে এটি পরবর্তী প্রজন্মের অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলোর জন্য একটি শক্তিশালী প্রসেসর হতে চলেছে বলে মনে হচ্ছে। এর উচ্চ ক্লক স্পিড, উন্নত ওরিয়ন কোর এবং শক্তিশালী জিপিইউ এটিকে অ্যাপলের এ১৯ চিপের সাথে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখতে পারে। তবে, এর চূড়ান্ত পারফরম্যান্স এবং বাজারে প্রভাব দেখতে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।