শারজা, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫: আসন্ন এশিয়া কাপ ২০২৫-এর প্রস্তুতি হিসেবে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে এসেছে শারজায় অনুষ্ঠিত একটি রোমাঞ্চকর ম্যাচ। রশিদ খানের নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তান ক্রিকেট দল পাকিস্তানকে পরাজিত করে ক্রিকেট বিশ্বে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। এই জয় শুধুমাত্র আফগানিস্তানের ক্রমবর্ধমান শক্তিমত্তার প্রমাণই নয়, বরং এশিয়া কাপের আগে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর জন্য একটি স্পষ্ট সতর্কবার্তা।
শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে আফগানিস্তানের খেলোয়াড়রা অসাধারণ পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া আফগানিস্তান দল মাঝারি রানের লক্ষ্য নির্ধারণ করে। তাদের ব্যাটিং লাইনআপে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং মিডল অর্ডারের হাশমতুল্লাহ শাহিদি, যারা দলের জন্য একটি শক্ত ভিত গড়ে তোলেন। তবে, ম্যাচের আসল নায়ক ছিলেন অধিনায়ক রশিদ খান, যিনি তার অসাধারণ বোলিং দক্ষতা দিয়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপকে ধ্বসিয়ে দেন।
পাকিস্তানের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ রশিদ খান এবং তার স্পিন আক্রমণের কাছে লড়াই করতে গিয়ে হিমশিম খায়। রশিদের নেতৃত্বে আফগানিস্তানের বোলাররা পাকিস্তানের মিডল অর্ডারকে দ্রুত ধ্বংস করে দেয়। মুজিব উর রহমান এবং নাভিন-উল-হকের মতো বোলাররাও তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করে পাকিস্তানকে চাপে রাখে। ফলে, পাকিস্তান নির্ধারিত রান তাড়া করতে গিয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় এবং শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি হাতছাড়া করে।
এই জয় আফগানিস্তানের জন্য শুধুমাত্র একটি মনোবল বাড়ানো জয়ই নয়, এটি তাদের ক্রিকেটীয় উত্থানের একটি উজ্জ্বল প্রমাণ। গত কয়েক বছরে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল আন্তর্জাতিক মঞ্চে ক্রমাগত উন্নতি দেখিয়েছে, এবং এই জয় তাদের সম্ভাবনার আরেকটি নিদর্শন। রশিদ খান ম্যাচ শেষে বলেন, “আমরা প্রতিটি ম্যাচে আমাদের সেরাটা দিতে চাই। পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে জয় আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। এশিয়া কাপের জন্য আমরা প্রস্তুত।”
অন্যদিকে, পাকিস্তানের জন্য এই পরাজয় এশিয়া কাপের আগে একটি বড় ধাক্কা। তাদের ব্যাটিং এবং বোলিং বিভাগে দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে, যা আগামী টুর্নামেন্টের জন্য তাদের কৌশল পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। পাকিস্তানের অধিনায়ক ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা আমাদের ভুল থেকে শিক্ষা নেব এবং আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরব। আফগানিস্তান দারুণ খেলেছে, এবং তারা এই জয়ের যোগ্য।”
এই ম্যাচের ফলাফল এশিয়া কাপ ২০২৫-এর প্রতিযোগিতাকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলেছে। আফগানিস্তানের এই জয় প্রমাণ করে যে তারা আর শুধুমাত্র একটি উদীয়মান দল নয়, বরং বড় দলগুলোর জন্য একটি শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী। ক্রিকেটপ্রেমীরা এখন অধীর আগ্রহে এশিয়া কাপের জন্য অপেক্ষা করছেন, যেখানে আফগানিস্তান তাদের এই ফর্ম বজায় রাখতে পারে কিনা, তা দেখার জন্য সবাই মুখিয়ে আছে।
Source: 1