ওয়েস্ট বেঙ্গল সরকারের দুর্গাপূজা ২০২৫-এর জন্য ১২ দিনের ছুটির ঘোষণা: বিস্তারিত খবর

ওয়েস্ট বেঙ্গল সরকার ২০২৫ সালের দুর্গাপূজার জন্য রাজ্যের সরকারি অফিসগুলোতে ১২ দিনের ছুটির ঘোষণা দিয়েছে, যা উৎসবের জন্য সকলের মধ্যে উল্লাসের সঞ্চার করেছে। এই ছুটিটি ২৬ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) থেকে শুরু হবে এবং ৭ অক্টোবর (মঙ্গলবার) পর্যন্ত চলবে। এর মধ্যে মহালয়া থেকে বিজয়াদশমী পর্যন্ত পূজার প্রধান দিনগুলো অন্তর্ভুক্ত, যা দেবী দুর্গার আগমন এবং বিদায়ের সময়কে আরও আনন্দময় করে তুলবে।এই ঘোষণাটি রাজ্যের কর্মচারীদের জন্য বিশেষভাবে স্বাগতম, কারণ এটি পূজার সময় পরিবারের সঙ্গে পূর্ণ সময় কাটানোর সুযোগ দেবে। ছুটির এই সময়কালে কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন অংশে হাজার হাজার প্যান্ডেল সাজানো হবে, যেখানে শিল্পকলা, সংস্কৃতি এবং ভক্তির এক অপূর্ব মিলন ঘটবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার এবছরও পূজা কমিটিগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে, যাতে উৎসবটি আরও ব্যাপকভাবে পালিত হয়।ছুটির বিস্তারিত সময়সূচী:

  • শুরু: ২৬ সেপ্টেম্বর (চতুর্থী তিথি, শুক্রবার) – এটি পূজার প্রস্তুতির দিন হিসেবে গণ্য হয়।
  • প্রধান পূজা দিন: ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর (মহাষষ্ঠী থেকে বিজয়াদশমী) – এই সময়কালে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী এবং দশমীর মতো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
  • শেষ: ৭ অক্টোবর – লক্ষ্মী পূজার (৬ অক্টোবর, সোমবার) পরের দিন পর্যন্ত, যা বিসর্জনের পরের দিন।

এছাড়াও, দীপাবলি এবং কালীপূজার জন্য আরও ১১ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, যা ১৮ অক্টোবর থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। এই সময়কালে কালীপূজা (২০ অক্টোবর, সোমবার) এবং দীপাবলির আলোকসজ্জা রাজ্যকে আলোয় ভরিয়ে দেবে।অন্যান্য ছুটির সামঞ্জস্য:২০২৫ সালে কয়েকটি ছুটি সপ্তাহান্তের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় কর্মচারীরা কিছু দিন কম ছুটি পাবেন। উদাহরণস্বরূপ:

  • গণতন্ত্র দিবস (২৬ জানুয়ারি) – রবিবার।
  • বাসন্তী পূজা (সরস্বতী পূজা, ২ ফেব্রুয়ারি) – রবিবার।
  • রাম নবমী – রবিবার।

এই কারণে সরস্বতী পূজার পরের দিন অতিরিক্ত ছুটি দেওয়া হবে, যাতে কর্মচারীরা কোনো ক্ষতি না করে।পটভূমি এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্ব:দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি বাংলার সাংস্কৃতিক পরিচয়ের একটি অংশ। দেবী দুর্গার মহিষাসুর-বধের প্রতীকী গল্পের মাধ্যমে এটি ভালোর জয় এবং নারীর শক্তির প্রতীক। কলকাতায় প্রায় ৩,০০০-এর বেশি বারোয়ারি পূজা অনুষ্ঠিত হয়, যার মধ্যে কুমারতুলী, বাগবাজার এবং কলেজ স্কোয়ারের মতো আইকনিক প্যান্ডেলগুলো বিশ্ববিখ্যাত। ইউনেস্কো এই উৎসবকে অস্পর্শযোগ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।সরকারের এই ঘোষণা কর্মচারী ইউনিয়নগুলোর দাবির ফলাফল, যারা লম্বা ছুটির জন্য দীর্ঘদিন ধরে চাপ প্রয়োগ করছিল। এটি অর্থনৈতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ পূজার সময় কলকাতা এবং অন্যান্য শহরে পর্যটন এবং ব্যবসা ব্যাপকভাবে বাড়ে। সরকারি কর্মীরা এখন পূজার প্রস্তুতিতে মনোনিবেশ করতে পারবেন, যেমন প্যান্ডেল সাজানো, ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ।এই ছুটির ঘোষণা রাজ্যের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও সরকারের উৎসবপ্রিয়তার প্রমাণ। পূজা কমিটিগুলোকে ২৫,০০০ টাকা অনুদান এবং বিদ্যুৎ বিলে ২৫% ছাড় দেওয়ার প্রস্তাবও রয়েছে, যা মহিলা-সম্প্রসারিত কমিটিগুলোর জন্য অতিরিক্ত ৫,০০০ টাকা বাড়িয়ে দেবে।

Scroll to Top